॥ মহীউদ্দীন আহমদ ॥
আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দ্রুততম সময়ে এরা আফগানিস্তান ছাড়তে বদ্ধপরিকর। তাদের তাড়াহুড়ো দেখে মনে হচ্ছে, আফগানিস্তান ছাড়তে পারলেই এরা বেঁচে যায়। যেকোনো মূল্যে আফগানিস্তান থেকে বেরিয়ে আসতে হবেÑ এটাই ওবামা প্রশাসনের শেষ কথা। এ দিকে ন্যাটো সম্মেলনে আফগানিস্তানের সামনে কঠিন সময় পড়ে আছে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা। এই সতর্কবাণী এমন একসময়ে উচ্চারণ করা হলো, যখন ন্যাটো জোট তড়িঘড়ি করে পাততাড়ি গুটাতে ব্যস্ত। বাস্তবে আফগান পরিস্থিতি এমন এক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, দখলদার বাহিনীর পক্ষে আফগান রণাঙ্গন ছেড়ে যাবার কোনো বিকল্প পথ খোলা নেই। কাবুলে আকস্মিক সফরে গত ২ মে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বাগরাম সেনা ঘাঁটিতে মার্কিন সেনাদের অভয় দিয়ে বলেছেন, আফগান যুদ্ধের সময় শেষ হয়ে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র আলকায়েদা নেটওয়ার্ককে পরাজিত করার খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। তিনি বলেন, আমরা নতুন দিনের ভোরের আলোর রেখা দেখতে পাচ্ছি। তালেবানদের সাথে আলোচনা প্রসঙ্গে ওবামা বলেন, আমরা এটা স্পষ্ট করে বলছি, আলকায়েদার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে এবং আফগানিস্তানের আইন মানলে তালেবান ভবিষ্যতে দেশটির অংশ হতে পারে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের অস্ত্র সমর্পণ ও আত্মসমর্পণের শর্ত দিয়েছিল, এখন সেই অবস্থান থেকে সরে এসে আফগান সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও যুদ্ধ ত্যাগ করার কথা বলছে। তালেবানরা অবশ্য বলেছে, তারা শান্তিপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করলেও ন্যাটো বাহিনীর ওপর হামলা ত্যাগ করবে না। কাবুলের কূটনৈতিক পাড়ায় সর্বশেষ ব্যাপক হামলার মাধ্যমে তালেবানরা তাদের পূর্বঘোষিত কৌশল কার্যকর করারই প্রতিফলন ঘটিয়েছে। তালেবানরা সামরিক হামলার মাধ্যমে মার্কিনিদের ওপর চাপ প্রয়োগের কৌশল অবলম্বন করেছে। বিলম্বে হলেও এখন যুক্তরাষ্ট্রের উপলব্ধি হয়েছে, তালেবানদের সাথে সমঝোতা ছাড়া আফগান সঙ্কট থেকে উত্তোরণের কোনো পথই উন্মুক্ত নয়। বস্তুতপক্ষে রণাঙ্গন ও রণাঙ্গনের বাইরে তালেবানদের শক্তিশালী অবস্থান ও তালেবানদের প্রতি আফগান জনসমর্থন যুক্তরাষ্ট্রকে তালেবানদের মূল্যায়নে বাধ্য করেছে। আলোচনার টেবিলে বসাতে যুক্তরাষ্ট্র তালেবানদের প্রায় সব শর্তই পূরণ করেছে, তাদের নেতাদের মুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, কিছু মুক্তি পেয়েছে, কাতারে রাজনৈতিক দফতর খোলা হয়েছে, তালেবানদের শক্তিমত্তার কাছে যুক্তরাষ্ট্রের নৈতিক পরাজয় ঘটেছে। এত দিন যুক্তরাষ্ট্র বলে আসছিল, তালেবানদের শক্তি ও সামর্থ্য শেষ হয়েছে। তারা পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে। আবার তারাই গোপন প্রতিবেদনে বলেছে, তালেবানদের শক্তি-সামর্থ্য অর্থপ্রাপ্তির উৎস কোনোটাই নিঃশেষ হয়নি, অুণœ রয়েছে। কাবুলের নিরাপত্তা বলয়ে সর্বশেষ ব্যাপক সামরিক হামলায় তাই প্রমাণিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য স্বস্তির বিষয় হলো, কাতারভিত্তিক আলোচনার প্রক্রিয়ায় তালেবানরা সংযুক্ত হয়েছে। এ দিকে পাকিস্তানকেও আলোচনাপ্রক্রিয়ার সাথে সংযুক্ত করার চেষ্টা চলছে। পাক প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে কাতারের আমিরের সাথে আলোচনা করেছেন। আমিরে কাতার আলোচনায় পাকিস্তানের স্বার্থ কোনোভাবে ুণœ হতে দেয়া হবে না বলে পাকিস্তানকে আশ্বস্ত করেছেন। এর আগে পাকিস্তান তালেবানদের সাথে শান্তি আলোচনায় সমর্থন দিয়েছিল। পাকিস্তান বলেছে, আফগানিস্তান নিয়ে ইসলামাবাদের কোনো গোপন অভিলাষ নেই এবং আফগানরা নিজেদের জন্য যে পথ বেছে নেবে তাতেই সমর্থন দেবে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তান জোর দিয়ে বলেছে, শান্তিপ্রক্রিয়াটি অবশ্যই হতে হবে আফগানদের নেতৃত্বে, যুক্তরাষ্ট্র বা বাইরের কোনো শক্তির নেতৃত্বে নয়। তবে প্রক্রিয়া যা-ই হোক না কেন, বাস্তবতা হলোÑ পাকিস্তান-আফগানিস্তান ও তালেবানদের সমন্বয়ে ত্রিপক্ষীয় সমঝোতাই কেবল আফগানিস্তানে শান্তি অর্জনে ফলপ্রসূ হতে পারে। কোনো এক পক্ষকে আলোচনার বাইরে রেখে শান্তিপ্রক্রিয়ায় সফলতা আসবে না। যুক্তরাষ্ট্র মাঝে মধ্যেই আফগানিস্তানে তাদের ব্যর্থতার দায়ভার পাকিস্তানের ওপর চাপাতে চায়। তালেবান ও আলকায়েদা গেরিলাদের দমনে ব্যর্থতার অভিযোগ এরা ইতোমধ্যেই পাকিস্তানের ওপর চাপিয়েছে। পাকিস্তান বলেছে, উপজাতি-অধ্যুষিত সাতটি অঞ্চলের মধ্যে ছয়টি অঞ্চল তারা ইতোমধ্যেই তালেবানমুক্ত করেছে। সুতরাং তাদের সফলতা অনেক বেশি।
পশ্চিমারা তালেবানদের যে দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখুক না কেন, বাস্তবতা হলোÑ আফগান জনগণ কারজাই, আফগান সেনাবাহিনী ও ন্যাটো জোটের ওপর মোটেও আস্থাশীল নয়। সাধারণ মানুষের আস্থা এখনো তালেবান নেতাদের ওপর রয়েছে। আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারজাই সরকারের আইনকানুন বলতে সবই কাগুজে, তালেবান নেতৃত্বই সেখানে প্রতিষ্ঠিত। দেশের এক উপজাতীয় নেতার মতে, বিদেশী সেনারা যেভাবে চক্কর দিয়ে চলে যায়, এতে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। কাজেই অন্যায়-অবিচার হলে এর বিচারের জন্য স্থানীয় তালেবান নেতাদের দ্বারস্থ হন তারা। এভাবে ক্ষমতা আপনা-আপনি তালেবানদের হাতে চলে যায়। তার ভাষ্য মতে, দেশের প্রত্যন্ত এলাকার স্থানীয় প্রশাসন তালেবানদের হাতে। কারজাই সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি তালেবানদের সমর্থন ভারী করতে সহায়তা করেছে। তাদের মতে, দুর্নীতি বিচার বিভাগের শিকড়ে জেঁকে বসেছে। কাজেই সুবিচারের জন্য তারা তালেবান বিচারকদের কাছে গিয়ে ধরনা দিচ্ছে। তালেবানি আদালতের তুলনা করতে গিয়ে জামশিদ (৩০) নামক কাবুলের এক ফল বিক্রেতার বক্তব্য হলোÑ তালেবানদের আদালত সংক্ষিপ্ত সময়ে দ্রুত কাজ করে। সেখানে বিচার হয় কঠোর নিয়ম মেনে। জামশিদ বলেন, কেউ চুরি করলে দ্রুত বিচার শেষ করে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। আর কারজাই প্রশাসনের অধীনে সে চোরের অপরাধ প্রমাণ করতেই শতবর্ষ লেগে যাবে, বিচার শেষে চোরের শাস্তি হবে কোনো নিশ্চয়তা নেই। তালেবান নেতা বা যোদ্ধার নামে সাধারণ মানুষ অভিযোগ করলে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে, দোষী সাব্যস্ত হলে ওই নেতা বা যোদ্ধাকে শাস্তি দেয়া হয়Ñ এটি তাদের জনগণের মন জয়ের বড় একটি কারণ। সাধারণ মানুষের তালেবান যোদ্ধাদের ওপর এই আস্থা যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের হতাশ করেছে।
কাতারভিত্তিক শান্তি আলোচনার কোনো ফলাফল বা অগ্রগতি এখনো সামনে আসেনি। যুক্তরাষ্ট্র ও কারজাই প্রশাসন জোর তৎপরতা চালালেও আশাব্যঞ্জক কোনো কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তালেবানরা এ ব্যাপারে বেশ কৌশলী ভূমিকা নিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কাবুলে ন্যাটোর বেসামরিক কর্মকর্তা সাইমন গাম বলেন, সত্যি বলতে কিÑ তালেবান কখনো আলোচনার টেবিলে আসবে কি না আমরা তা জানি না। তবে তিনি স্বীকার করেন, বিদেশী সেনারা চলে গেলে তালেবানদের সাথে আলোচনা সহজ হবে। কারণ তারা বলে আসছে, বিদেশী সেনাদের তাড়াতেই তারা লড়ছে। তালেবানদের অনাগ্রহের অন্যতম কারণ হলো, তালেবানরা কাবুল ও আশপাশের পরিস্থিতিকে তাদের অনুকূলে বিবেচনা করছে।
দুই.
এ দিকে এপ্রিল মাসের শেষার্ধে আফগানিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা দুই দেশের মধ্যে একটি দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারী ও কৌশলগত সহায়তা চুক্তির প্রাথমিক খসড়ায় স্বাক্ষর করেছেন। ২০১৪ সালে আফগানিস্তান থেকে ন্যাটো জোটের সৈন্য প্রত্যাহারের পর কাবুল ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সম্পর্কের কাঠামো কেমন হবে তা নির্ধারণই এই চুক্তির মূল লক্ষ্য। কাবুলে মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র গেভিন সান্ডওয়াল চুক্তির ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য আফগানিস্তানের সাথে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব, যা আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি জোরদার করবে এবং আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য অর্জন অর্থাৎ আলকায়েদা ও তাদের চরমপন্থী সহযোগীদের পরাজিত করার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে। আমরা মনে করি, কৌশলগত চুক্তি সেই লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে। বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তান থেকে সরে যাওয়ার মার্কিন কৌশলের মূলে থাকছে সদ্য সমাপ্ত নিরাপত্তা ও কৌশলগত সহায়ক চুক্তি। আফগানিস্তান থেকে বহুজাতিক সেনা প্রত্যাহারের পর সেখানে মার্কিন বাহিনীর সদস্যদের থেকে যাওয়া ও তাদের নিরাপত্তা প্রদান আফগান বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও নিরাপত্তা প্রদান এবং আর্থিক সহায়তাদানের বিষয় চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আফগানিস্তানের গত কয়েক মাসের ভয়াবহ অস্থিরতার পর এই চুক্তিকে কোনো কোনো মহল উভয় দেশের বড় অর্জন ও স্বস্তির কারণ হিসেবে দেখলেও বাস্তবে কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে নিরাপদ অবস্থানের পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করে নিয়েছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের অবস্থান রণাঙ্গনে নয়, অন্দর মহলে থাকবে। কারজাই দলিল করে আফগানিস্তানের মাটিতে বিদেশী সৈন্যের উপস্থিতি মেনে নিয়েছেন। ফলে হুমকিতে পড়বে আফগানিস্তানের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব। বিদেশী সৈন্য কারজাইকে পাহারা দিতে নয়, বরং তাদের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ সংরক্ষণ করতে আফগানিস্তানে অবস্থান করবে। আর আফগান মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যের উপস্থিতি আফগানিস্তানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অর্জনে কতটুকু সহায়ক হবে, তা ভবিষ্যৎই বলে দিবে। তালেবানরা নীতিগতভাবে তাদের জমিনে বিদেশী সৈন্যের উপস্থিতি মেনে নিতে রাজি নয়।
আরেকটি বিষয় হলো, বর্তমান সময়ে গণচীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় উৎকণ্ঠার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এশিয়ার এই অঞ্চলে চীনের সরব উপস্থিতিকে যুক্তরাষ্ট্র আগামী দিনগুলোতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবেই মনে করে। এমন বাস্তবতায় এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের সামরিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ায় তার উচ্চাভিলাষী সাম্রাজ্যবাদী লিপ্সা চরিতার্থে এক নতুন কৌশল প্রণয়নে ব্যস্ত। কৌশলগত নিরাপত্তা চুক্তির আড়ালে যুক্তরাষ্ট্র মূলত ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপসহ এশিয়ার সমুদ্রবেষ্টিত বিশাল অঞ্চলকে ঘিরে নতুন প্রতিরক্ষা বলয় গড়ে তুলতে যাচ্ছে। আসন্ন প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের আকৃষ্ট করতে এবং এশিয়ায় অধিকতর মনোযোগী হওয়ার লক্ষ্যে ওবামার প্রয়োজন দ্রুততম সময়ে আফগান সঙ্কটের একটা সমাধান নিশ্চিত করা। যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান নিয়ে যে সঙ্কটে ভুগছে, তা থেকে উত্তোরণে তালেবানদের সাথে সমঝোতার পথ বেছে নিতে হয়েছে ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। আলোচনায় অংশগ্রহণকারী তালেবান নেতাদের নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়ে ইসলামাবাদ, কাবুল ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সমঝোতাও হয়েছে গত মাসে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছেÑ তালেবানরা বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না, যতটা গুরুত্ব রয়েছে কাবুল ও ওয়াশিংটনের নীতিনির্ধারকদের কাছে। তালেবানরা আলোচনায় কালক্ষেপণের নীতি অবলম্বন করেছে নিজেদের সুবিধাজনক অবস্থান বিবেচনায় হয়তো তাদের এই কৌশল।
যুক্তরাষ্ট্র-আফগান কৌশলগত নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়টি তালেবানদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলোÑ যুক্তরাষ্ট্রের জিওলোজিক্যাল সার্ভে অনুযায়ী আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যমানের অতীব মূল্যবান খনিজ ও ধাতবসহ প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। তেল, ইউরোনিয়াম, স্বর্ণ, তামার এসব খনির ওপর লোলুপ দৃষ্টি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানিগুলোর। সে জন্য যেটা প্রয়োজন তা হলোÑ আফগানিস্তানে এমন একটি সরকার দরকার, যে নাকি যুক্তরাষ্ট্রকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এখানে কাজের সুযোগ করে দেবে। সুতরাং আফগানিস্তানে মার্কিন স্বার্থ অনেক গভীরে। এখানে ভূ-কৌশলগত রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্বার্থও জড়িত রয়েছে। এতে লাভবান হবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি। আফগানিস্তানে শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের যে প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র চালাচ্ছে এবং এর পেছনে যে অর্থ ব্যয় করছে, তা শুধু আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বিবেচনায় করা হচ্ছে না, এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব স্বার্থও জড়িত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন