বুধবার, ১৩ জুন, ২০১২

ভারতের পূর্বমুখী কূটনীতি



॥ জসিম উদ্দিন ॥

মিয়ানমারের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে ভারত খুব আগ্রহী হয়ে উঠেছে। অল্প সময়ের মধ্যে দেশটি সফর করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং সবশেষে প্রধানমন্ত্রী। শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের সফরে মিয়ানমারের জন্য একের পর এক প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে ভারত। মে মাসের শেষ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী মনমোহনের তিন দিনের সফরে ১২ দফা সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সহজ শর্তে ৫০ কোটি ডলারের ঋণ, সরকারি কর্মকর্তাদের ভারতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন, যৌথ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ ফোরাম গঠন, উভয় দেশের মধ্যে বুদ্ধিবৃত্তিক আদান-প্রদান। ভারতে দরিদ্র জনসংখ্যা সম্মিলিতভাবে আফ্রিকার দরিদ্র জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। ুধা ও অভাবের তাড়নায় আত্মহত্যার ঘটনা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ভারতে। দরিদ্র কৃষক যাদের কিছু ভিটেমাটি আছে সেগুলো বন্ধক রেখে ুধা নিবারণের জন্য জোতদার মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নেন। ঋণের জালে ধরাশায়ী হয়ে মহাজন জোতদারের কাছে ভিটেমাটি খোয়ান তারা। এর প্রতিক্রিয়ায়ও প্রতিনিয়ত আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। সরকারের পক্ষ থেকে এর সমাধানে কোনো সফলতা নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ফসলহানির বিপরীতে সরকারের কাছ থেকে সাহায্য না পাওয়ার অসংখ্য খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। পশ্চাৎপদ এই ভারত এখন নানা সাহায্যের ডালি নিয়ে যাচ্ছে মিয়ানমারে। নির্মাণ করে দিচ্ছে তাদের রাস্তা। ঝড়ের কবলে পড়ে বিধ্বস্ত হওয়া বাড়িঘর, স্কুল-কলেজ মেরামত করে দিচ্ছে নগদ অর্থ দিয়ে।
সমঝোতা স্মারকে বর্ণিত বিষয়গুলো থেকে এটা পরিষ্কারÑ মিয়ানমারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে তাদের জন্য মুলা ঝুলিয়েছে ভারত। মুগুর-মুলানীতি শক্তিশালী দেশগুলোর একটি কূটনৈতিক হাতিয়ার। অপেক্ষাকৃত দুর্বল দেশগুলোকে তারা দান অনুদান দিয়ে কব্জা করে। এটি হচ্ছে মুলানীতি। সাহায্য-সহযোগিতার পরও যদি দুর্বল দেশগুলো সায় না দেয়, শক্তিশালী দেশটি তখন শক্তি প্রয়োগ করে। চোখরাঙানি থেকে শুরু করে সামরিক শক্তি প্রয়োগ এর অন্তর্ভুক্ত। এটিকে বলে মুগুরনীতি। ভারত-মিয়ানমার সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতের অনুসৃত নীতিকে শুধু মুলানীতি বলতে হবে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মুগুরনীতি প্রয়োগের সামর্থ্য ভারত রাখে না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যদিও ভারত কেবল মুগুরনীতি প্রয়োগ করে সফলতা পাচ্ছে। মিয়ানমারের সাথে ভারতের ১৬৪০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। সেখানে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক হতাহতের কোনো ঘটনা নেই। বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ প্রায় প্রতিদিন মানুষ হত্যা করছে। সীমান্তে বাংলাদেশীদের প্রতি চরম অপমানকর আচরণ করছে নিয়মিত। শক্তিশালী দেশগুলো অনেক সময় মুলা ঝুলিয়ে তাদের কার্যসিদ্ধি করে; কাজ হয়ে গেলে ঝোলানো মুলাটি ফিরিয়ে নেয়। মিয়ানমারের প্রতি ঝোলানো মুলা ভারতকে দিতে হবে। স্কুল-কলেজ নির্মাণ, রাস্তা নির্মাণ এবং নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে অতি উৎসাহের সাথে সহায়তাদান থেকে তার নজির মিলছে। বরং মুলার পেছনে আরো খাবার মিয়ানমারের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে। না হলে পূর্বমুখী দ্বার খোলা একই সাথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো নিয়ে ভারতের নতুন নিরাপত্তা ভাবনা মার খাবে। মিয়ানমারের বিশাল জ্বালানিভাণ্ডারে ভাগ বসানোর যে লোভ তা-ও ভণ্ডুল হয়ে যাবে। কারণ মিয়ানমারের সেনাশাসকেরা জাতীয় স্বার্থ অুণœ রেখে বৃহৎ শক্তিগুলোর সাথে পথ চলার শিক্ষা ইতোমধ্যে রপ্ত করে ফেলেছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যুগপৎভাবে চীন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সাফল্যের সাথে পথ চলছে। ভারত সেখানে তুলনামূলক ছোট খেলোয়াড়।
অতি আগ্রহী হয়ে ওঠা ভারত দীর্ঘ দিন মিয়ানমারের প্রতি শীতল মনোভাব দেখিয়েছে। বিরোধীদের প্রতি সেনা স্বৈরশাসকদের চরম অত্যাচার-নির্যাতনের বিরুদ্ধে ভারত কোনো আওয়াজ করেনি। গণতন্ত্রকামীরা দীর্ঘ দমন-নিপীড়নে স্তব্ধ হয়ে যায়। অং সান সু চি হন গৃহবন্দী। সামরিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে বৌদ্ধ ভিুদের জেগে উঠতে দেখা যায়। সেনাশাসকদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে তারা। সেসব বিক্ষোভেও সেনাবাহিনী নিষ্ঠুর নির্যাতন চালায়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিবেশী ভারত তখন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক না গলানোর নামে স্বৈরতন্ত্রকে সমর্থন দিয়ে গেছে। প্রকৃত ঘটনা হচ্ছেÑ কোন অবস্থানটা ভারতের জন্য সুবিধাজনক তা ঠিক করতে পারছিল না ভারত। গণতান্ত্রিক নেত্রী নোবেল বিজয়ী অং সান সু চিকে সমর্থন করে সেনাশাসকদের বিরাগভাজন হতে চায়নি ভারত। অন্য দিকে সেনা নেতৃত্বকে সমর্থন দিতে চায়নি দুটো কারণে। প্রথমত, তাদের গণতান্ত্রিকতার মুখোশ খসে পড়বে। দ্বিতীয়ত, সেনা জান্তার পতন হলে ভারতের জন্য ক্ষতির পরিমাণটা একটু বেশি হবে। এ নিয়ে ভারত দীর্ঘ দিন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। দীর্ঘ নীরবতার পর ভারতীয় কর্তাব্যক্তিদের মিয়ানমারে হুমড়ি খেয়ে পড়া কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। নতুন বিশ্বব্যবস্থায় ভারতের সুপার পাওয়ার হওয়ার উচ্চাভিলাষের এটি একটি অংশ। 
সেনা নেতৃত্ব এখন সাফল্যজনকভাবে এগিয়ে নিচ্ছে মিয়ানমারকে। দেশের স্বার্থে গণতন্ত্রায়নের বিকল্প রাস্তা তাদের নেই। তারা এমন পথই খুঁজছে, যেখানে সেনানেতৃত্বকে স্বৈরাচারী বলতে পারবে না কেউ। শাসকেরা দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমক্র্যাসি (এনএলডি) এবং এর নেত্রী অং সান সু চির আস্থা অর্জন করেছে। বৃহৎ শক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রকে আশ্বস্ত করতে পেরেছে। পশ্চিমারা অর্থনৈতিক অবরোধ তুলে নিতে শুরু করেছে দেশটির ওপর থেকে। বিশাল প্রাকৃতিক সম্পদের আধার মিয়ানমারে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে। সেখানে ব্যবসায়-বাণিজ্যের বিপুল সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পশ্চিমাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি বৃহৎ অংশীদার চীনকে অসন্তুষ্ট করেনি মিয়ানমারের প্রতি। এ কৃতিত্ব মিয়ানমারের বর্তমান নেতৃত্বের। চীন অনেক বড় ব্যবধানে মিয়ানমারের এক নম্বর বিনিয়োগকারী এবং বাণিজ্য অংশীদার। সম্প্রতি দণি চীন সাগরে ভিয়েতনামের সাথে বিরোধ বাধে চীনের। মিয়ানমার দ্রুত চীনের প্রতি সমর্থন জানায়। এতে করে বিষয়টি পরিষ্কার, বাকি বিশ্বের সাথে মিয়ানমারের উদার সম্পর্ক সৃষ্টি হওয়ার অর্থ এই নয় যে, চীনের সাথে তাদের বন্ধুত্বের ঘাটতি হবে। এর মধ্যে ভারতের সাথে ভিয়েতনামের চুক্তি হয়েছে। এশিয়ায় যেকোনো রকমের ক্ষমতার দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন বিরোধী শিবিরে অবস্থান করবে। 

চীনকে কেন্দ্র করে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে মার্কিন নীতির পরিবর্তন হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ পরিবর্তনকে মিয়ানমার নিজেদের অনুকূলে ব্যবহার করতে পারছে। অন্তত ছাড় দিয়ে সম্পর্ক গড়ে নেয়ার ভারতীয় প্রচেষ্টায় যার প্রমাণ মেলে। বঙ্গোপসাগরে স্বার্থ রক্ষায় তারা এরই মধ্যে কৌশলে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতকে ব্যবহার করেছে। বঙ্গোপসাগরে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণে মিয়ানমার-ভারতের অলিখিত মৈত্রী লক্ষ করা গেছে। এ মৈত্রী ভেদ করে দেশের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক শক্তির আধার বঙ্গোপসাগরে অধিকার রক্ষা করা বাংলাদেশের জন্য একরকম অসম্ভব। বিগত অনির্বাচিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মিয়ানমার নৌশক্তির মহড়া দিয়েছে। তারা বাংলাদেশকে আক্রমণ করতে উদ্দত হয়েছিল। স্থলসীমান্তেও সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে। এ সময়ে ভারতের কর্তাব্যক্তিদের মিয়ানমার সফর ও দেশটির সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার জোর চেষ্টা দেখা গেছে। ভারতের মতো একটি বৃহৎ শক্তির বাংলাদেশের প্রতি অনুকূল সমর্থন থাকলে কোনোভাবেই মিয়ানমার বাংলাদেশের প্রতি এমন ঔদ্ধত্য দেখাতে পারে না। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! ওই সময় মইন-ফখরুদ্দীনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভারতের প্রভাব বলয়ে ঢুকতে শুরু করে। আর বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ভারতকে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্র ঘোষণা করা হলেও কার্যত ভারতীয় বন্ধুত্বের পাল্লা মিয়ানমারের দিকে যে ভারী এসব ঘটনায় তার প্রমাণ মেলে। 
পরিবর্তিত মার্কিননীতির অংশ হিসেবে দণি ও দণি-পূর্ব এশিয়ায় ভারতের প্রভাব বৃদ্ধিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধু সমর্থন করে ক্ষান্ত থাকতে চায় না, বরং নিজ উদ্যোগে টেনে নিতে চায়। যদিও কার্যক্ষেত্রে ভারত চীনের ধারেকাছেও যেতে পারেনি। তাই বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে ভারত গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় অর্থনৈতিক জোট আসিয়ানের সাথে। মিয়ানমারকে অবলম্বন করে সে চেষ্টা তারা চালাচ্ছে। বাংলাদেশ পূর্বমুখী পররাষ্ট্র নীতি নিয়েছিল। চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকার সময় এ লক্ষ্যে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও চীনের সাথে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা হয়েছে। জোটনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশগুলো সফর করেছেন। এ নীতির অংশ হিসেবে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। মিয়ানমার অংশে সড়কপথ নির্মাণে নগদ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। এ রুটটি এশিয়ান হাইওয়ে হিসেবে দেখতে চায় বাংলাদেশ। ভারত চায় ভারত থেকে রুটটি বাংলাদেশে ঢুকে সেটি আবার ভারতে ঢুকবে। সেখান থেকে মিয়ানমার হয়ে চলে যাবে দণি-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। আমলান্ত্রিক জটিলতার কারণে বাংলাদেশের পূর্বমুখী নীতি বেশি দূর এগোয়নি। পরবর্তী সময়ে তত্ত্বাবধায়ক আমলে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের যুদ্ধাবস্থা দেখা দেয় উল্টো। বাংলাদেশে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মিয়ানমারের সাথে ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়। আর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হয়ে পড়ে একেবারেই ভারতকেন্দ্রিক।
ভারতের পূর্বমুখী পররাষ্ট্রনীতির জন্য অনেক ছাড় দিতে হবে। বিষয়টি কখনো এমন হবে না, মিয়ানমার বন্ধুত্বের নজির হিসেবে সহজে পূর্ব দিকে রাস্তা করে দেবে। মিয়ানমারের হাতে অনেক কার্ড রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম চীনা কার্ড এবং ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর ঠুনকো নিরাপত্তাব্যবস্থা। ভারতীয় মাওবাদীদের তারা আশ্রয় দেয় এমন কোনো প্রমাণ নেই। তবে মাওবাদীরা যে মিয়ানমার ও চীনকে তাদের প্রধান অবলম্বন মনে করে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তারা চীনা অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করে সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সফরে মিয়ানমার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারতবিরোধী কোনো কর্মাকাণ্ড তারা প্রশ্রয় দেবে না। যেটি ইতোমধ্যে সহজে বাংলাদেশের কাছ থেকে আদায় করেছে ভারত। ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী দমনের নামে বাংলাদেশে সম্প্রতি অনেক অভিযান চালানোর অভিযোগ রয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে। 
চীনাদের বিপরীতে এশিয়ায় ভারতীয় উত্থানের যে নীতি তার সফলতা মিয়ানমারের সাথে সম্পর্কের মাত্রায় পরিমাপ করা যেতে পারে। চলতি বছরে মিয়ানমারে ৮৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন। সেখানে ভারতীয় প্রতিশ্রুত বিনিয়োগের পরিমাণ মাত্র ১৯ কোটি ডলারের কিছু কম। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভারতের অবস্থান ১৩তম। ২০১০ সালে চীন-মিয়ানমার বাণিজ্যের পরিমাণ ৪৪০ কোটি ডলার। একই বছর ভারত-মিয়ানমার বাণিজ্যের পরিমাণ মাত্র ১২০ কোটি ডলার। ভারতের বিপরীতে বাণিজ্য ভারসাম্যও বড় আকারে মিয়ানমারের পক্ষে রয়েছে। তবে মিয়ানমারকে উপলক্ষ করে ভারত শক্তিশালী বাণিজ্য জোট আসিয়ানের ডায়ালগ পার্টনার হতে পেরেছে। দেশগুলোর সাথে উন্মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা চালানোর পরিবেশ সৃষ্টি করতে পেরেছে। ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া ও লাওসকে সাথে নিয়ে মেকং গঙ্গা অর্থনৈতিক জোটের সদস্য হতে পেরেছে। থাইল্যান্ড বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারকে অন্তর্ভুক্ত করে ভারত গঠন করেছে বিমসটেক নামক আরেকটি অর্থনৈতিক সামাজিক জোট। মিয়ানমারকে সার্কের পর্যবেক্ষক করা হয়েছে। এগুলোর কোনোটি এখনো অর্থনৈতিক রাজনৈতিক কোনো পর্যায়ে কার্যকর কোনো সংগঠন নয়। বাংলাদেশের জনগণকে অনাস্থার মধ্যে রেখে কেবল মিয়ানমারকে অবলম্বন করে ভারত কখনো টেকসই পূর্বমুখী নীতি বাস্তবায়ন করতে পারবে না। এতে করে মিয়ানমারের সুযোগটা সব সময় বাড়বে। উত্তর-পূর্ব ভারতের ঠুনকো নিরাপত্তার সুযোগ সব সময় নেবে মিয়ানমার। 
jjshim146@yahoo.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন